অর্থশাস্ত্র চাণক্য রচিত একটি সুপ্রাচীন রাষ্ট্রনীতি বিষয়ক গ্রন্থ।[১] মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনকালে রচিত এই গ্রন্থটি প্রাচীন ভারতের রাষ্ট্রনীতি ও শাসনসংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ইতিহাস।
অর্থশাস্ত্র ১৫টি ভাগে বিভক্ত। এই ভাগগুলি ‘অধিকরণ’ নামে পরিচিত। গ্রন্থের মোট শ্লোকসংখ্যা ৬,০০০। রাজ্যশাসন, শত্রুদমন, রাজস্ব, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইন, পৌর প্রশাসন প্রভৃতি নিয়ে এই ১৫টি বিভাগের প্রতিটি রচিত। অর্থশাস্ত্রের সকল বক্তব্য পরিষ্কার ও স্ববিরোধিতাদোষ থেকে মুক্ত। বিশুদ্ধ রাজতন্ত্র অর্থশাস্ত্রের মতে শ্রেষ্ঠ শাসনব্যবস্থা। গণজীবনের সকল ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সমর্থক অর্থশাস্ত্র। এছাড়া দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের স্বার্থে রাজকর্মচারী নিয়োগ কালে সাবধানতা, কৃষির উন্নতিকল্পে কৃষকদের উৎকৃষ্ট বীজ ও সার সরবরাহ, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সেচ ব্যবস্থার উন্নতির প্রস্তাব, জমির উপর চাষীর ন্যায্য অধিকার স্বীকার, নারীর বিশেষ অধিকার স্বীকার, বিবাহ বিচ্ছেদ ও বিধবা বিবাহের বিধান ব্রাহ্মণের বিশেষ অধিকার অস্বীকার ও অপরাধ অনুসারে ব্রাহ্মণেরও প্রাণদণ্ডের বিধান – এই সকল অর্থশাস্ত্রে প্রগতিশীল চিন্তা। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সংক্রান্ত তার তত্ত্বগুলির জন্য তাকে ইতালির বিশিষ্ট রাষ্ট্রনীতিবিদ মেকিয়াভেলির সঙ্গে তুলনা করা হয়।