ইসলাম ও বাঙালি মুসলমান সমাজ

১৮৭২ সালে ব্রিটিশ-বাংলায় প্রথমবারের মতো লোকগণনা হলে মুসলিম জনসংখ্যার হার সরকার ও শিক্ষিত বাঙালির ধারণাকে বাস্ত প্রমাণিত করে। এতদিন ধারণা ছিল বাংলায় মুসলমানের সংখ্যা হিন্দুর তুলনায় অনেক কম। জরিপ দেখাল হিন্দু-মুসলমানের সংখ্যানুপাত প্রায় সমান সমান। ১৮৮১ সালের দ্বিতীয় জরিপে মুসলিম সংখ্যা পঞ্চাশ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। স্বভাবতই কৌতূহল ও প্রশ্ন জাগল মুসলিম জনসংখ্যার এই বিপুলত্বের কারণ কী? এরা এল কোথা থেকে কিংবা এদের জন্মগত উৎস কী? শুরু হয়ে যায় এ নিয়ে লেখালেখি। এইচ. বেভেরলি মন্তব্য করেন বাংলার মুসলমানদের উদ্ভব মূলত নিম্নবর্ণের হিন্দুদের থেকে। কিন্তু ঢাকার সিভিল সার্জন জেমস ওয়াইজ বললেন অন্য কথা। তাঁর মতে উৎসাহী মুসলিম সৈনিকদের তরবারির ভয়ে ভীতু বাঙালি ইসলামের দিকে ঝোঁকে। এই মন্তব্যের পেছনে ছিল ইংরেজের ভেদনীতির চাতুর্য। সেজন্যই কোরান ও কৃপাণের জোরে ইসলামের বাংলায় আসার তত্ত্ব উদ্ভাবন। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। মুর্শিদাবাদ এস্টেটের দেওয়ান খন্দকার ফজলে রাব্বি এসব মতের বিরোধিতা করে ফারসি ভাষায় লেখেন হকিকত-এ- মুসলমানান-এ- বাঙ্গালাহ (১৮৯১) নামের বই। ১৮৯৫ সালে এটি The Origin of the Musalmans of Bengal নামে তিনি অনুবাদও করেন। তাঁর মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে বাংলার অধিকাংশ মুসলমান বিদেশাগত মুসলমানের বংশধর এবং এদেশে শক্তি দিয়ে ইসলাম প্রচার হয়নি।

বইটি মোবাইলে পড়তে স্কেন করুন

ইসলাম ও বাঙালি মুসলমান সমাজ